Bd-onlinemagazine ঢাকা জহিরুল ইসলাম।
অভিনেতা সাদেক বাচ্চু জন্ম গ্রহণ করেন ১জানুয়ারি ১৯৫৫ সালে, তার আদি নিবাস চাঁদপুর।
সাদেক বাচ্চু প্রাথমিক জীবন ও পরিবার :

সাদেক বাচ্চু ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। তার পৈত্রিক নিবাস বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলায়। তার পিতা ডাক বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তিন মাস পর তার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর ১৫ বছর বয়সে ডাক বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরিরত অবস্থায় তিনি টি এন্ড টি কলেজ হতে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

অভিনেতা সাদেক বাচ্চু প্রথমে তার কর্মজীবন শুরু হয় :

১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৩৩ বছর চাকুরীর পর ২০১৩ সালে তিনি ডাক বিভাগের চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করেন। ডাক বিভাগের চাকুরী ও অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটক রচনা করেছেন। তার রচিত নাটক মুক্তধারা হতে প্রকাশিত হয়েছে।

অভিনেতা সাদেক বাচ্চু প্রাথমিক অভিনয় জীবন শুরু করেন :

মাহবুব আহমেদ সাদেক ১৯৬৩ বেতারে ‘খেলাঘর’ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন। ১৯৭২-৭৩ সময়ে তিনি ‘গণনাট্য পরিষদ’ নামের একটি থিয়েটারে যুক্ত হন। তিনিউম্মোচন ও প্রথম পদক্ষেপ নামের আরো দুটি থিয়েটার দলের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন।দলগুলির মধ্যে প্রথম পদক্ষেপ তার নিজের গঠিত দল। ১৯৮৪ সালে তিনি ‘মতিঝিল থিয়েটার’ প্রতিষ্ঠা করেন।এদলটির হয়ে তিনি এখনো নাটক রচনা, নির্দেশনা ও অভিনয় করছেন। তার রচিত ও নির্দেশিত নাটকগুলির মধ্যে কাফনের পকেট নাই, কুলাঙ্গার ও ক্যাপ উল্লেখযোগ্য।

১৯৭৪ সালে তিনি টেলিভিশনে অভিষিক্ত হন। তৎকালীন বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম তার মঞ্চ অভিনয় দেখে আকৃষ্ট হন। ইমাম প্রযোজিত ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকের মাধ্যমে সাদেক টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। টেলিভিশনে তিনি ঝুমকা, পূর্ব রাত্রি পূর্বদিন সোজন বাদিয়ার ঘাট, নকশী কাঁথার মাঠ, জোনাকী জ্বলে, গ্রন্থিক গণ কহে-এর মত জনপ্রিয় নাটকসহ এক হাজারের বেশী নাটকে অভিনয় করেছেন।টেলিভিশনে নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও অভিনয় করেছেন তিনি।

অভিনেতা সাদেক বাচ্চু প্রাথমিক চলচ্চিত্র শুরু হয় ১৯৮৫- ২০২০ :

১৯৮৫ সালে রামের সুমতি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বড় পর্দায় অভিষিক্ত হন। রামের সুমতি সিনেমাটি পরিচালনা করেন শহিদুল আমিন।বহুমাত্রিক এই গুণী অভিনেতা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছন। তার অভিনীত প্রথম দিকের চলচ্চিত্রে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ে করেন। সুখের সন্ধানে চলচ্চিত্র দিয়ে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর থেকে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অধিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। পরিচালকএহতেশাম-এর চাঁদনী চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তার মঞ্চনাম ‘সাদেক বাচ্চু’ এহতেশামের দেয়া। চাঁদনী চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় এহতেশাম তাকে এই নাম দেন। এরপর থেকে তিনি তার মঞ্চনামে চলচ্চিত্র জগতে পরিচিতি পান। অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন হিসেবে ২০১৮ সালে একটি সিনেমার গল্প চলচ্চিত্রে খলচরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

অভিনয় সাদেক বাচ্চু ব্যক্তিগত পরিবার জীবন ও মৃত্যু :

সাদেক বাচ্চু শাহনাজ জাহানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।

বাচ্চু কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহাখালীতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। অসংখ্য সিনেমা অভিনয় করে দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন সাদেক বাচ্চু। মিডিয়া লোক সাবাই ভালবাসতেন সন্মান করতেন।

একজন অভিনেত্রী “উর্মি বিশ্বাস” সোশ্যাল মিডিয়ায় ইনবক্সে বলেন, সার সাথে শুটিং সময় যখন দেখা হয়, আমাকে ভাল উপদেশ দিয়ে ছিল। এটা আমি মনে রেখেছি বলে ছিল। মিডিয়া তে তুমি নতুন বুঝেশুনে পা দিবে। প্রতিটি পদক্ষেপ নিবে ভাল কাজ করা, একটু একটু করে আগাতে হবে। তুমি ভাল কিছু করতে পারবে। তুমি যদি অভিনয় কে ভালবাসতে হবে মনদিয়ে কাজ করতে হবে। তোমার সাধনা করতে হবে। অভিনয় কাজ কে সন্মান করতে হবে। শুটিং কাজে সময় কে মুল্য দিতে হবে। সাদেক বাচ্চু সার সবাইকে আপন করে নিত। সার সাদা মনে মানুষ ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *