নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা বিডি-অনলাইনম ম্যাগাজিন ডটকম
প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নানা উৎসব ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করেন।
এর মধ্য দিয়ে খুলে গেলো দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সারা দেশে ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন কর্মসূচির জেলায় আয়োজন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০১ সালে আমরা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর খালেদা জিয়া এসে তা বন্ধ করে দিয়েছিল। আমরা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবার নির্মাণ কাজ শুরু করি।
“তখন তারা কী বলেছিল? বলেছিল, আওয়ামী লীগ কোনোদিন নাকি পদ্মা সেতু করতে পারবে না। খালেদা জিয়াকে আজকে জিজ্ঞেস করি- আসুন, দেখে যান, পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কি না।”
দুর্নীতি নয়, বরং মুহাম্মদ ইউনূসের তদ্বিরেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে বিশ্ব ব্যাংক সরে গিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুর্নীতির সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কে দুর্নীতি করেছে? এই সেতু আমাদের প্রাণের সেতু। যে সেতুর সাথে আমার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত, সেই সেতু করতে যেয়ে কেন দুর্নীতি হবে?”
বিশ্ব ব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভবপর নয় বলে যারা নিরুৎসাহিত করেছিলেন, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকে কীভাবে করতে পারলাম?”
“আপনারা এই দেশের জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, পাশে থেকেছেন। জনগণের শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি সেটাই বিশ্বাস করেছি।”
পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুবিধার দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আর আপনাদের কষ্ট করতে হবে না। এই খরস্রোতা পদ্মা নদী পার হতে যেয়ে আর কাউকে সন্তান হারাতে হবে না, বাবা-মাকে, ভাই-বোনকে হারাতে হবে না। আজকে সেখানে আপনারা নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।
“আমাদের প্রত্যেকটা এলাকা এত দুর্গম ছিল, আজকে সেখানে রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ করেছি বলেই সব জায়গায় যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে। এই এলাকার লোক যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সেজন্য পায়রা পর্যন্ত আমরা সেতু বানিয়ে দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে মানুষ চলাফেরা করতে পারে।”
পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি আসার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “সারাদেশে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে। এখানেও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, শিল্পাঞ্চল হবে, কর্মসংস্থান হবে, কল-কারখানা হবে, আমাদের ফসল উৎপাদন হবে। সেই ফসল আমরা প্রক্রিয়াজাত করতে পারব। দেশে-বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। এখানে যে মাছ হবে, তা আমরা প্রক্রিয়াজাত করে দেশে-বিদেশে পাঠাতে পারব। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ ঘুচে যাবে। ভাগ্য পরিবর্তন হবে।”
খাদ্যের চাহিদা পূরণে সবাইকে ফসল উৎপাদনের দিকে জোর দিতে বলেন তিনি।
আগামী বর্ষাকালে এ অঞ্চলে বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করে শেখ হাসিনা বলেন, “এখন থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, আপনারাও প্রস্তুতি নিতে থাকেন। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার শক্তি বাংলাদেশ রাখে।