Oplus_0

নিজস্ব , প্রতিবেদক বিডি-অনলাইন ম্যাগাজিন ডটকম,Published Thus, 8, , 2025, 12,35

বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধলো কে, তা হলে কেহ এই বিষয় জানে না, পুলিশপ্রশাসন, সেনাবাহিনীর, উপদেষ্টারা সবাই কি ঘুমিয়ে ছিল। আবদুল হামিদ তো আওয়ামিলীগের দোসর, খুনি হাসিনা সহযোগিতা ছিল হত্যা মামলা আসামি তা হলে কি ভাবে দেশত্যাগ করেন!!

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাস পর দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বুধবার রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশ ছাড়েন। মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এদিকে আবদুল হামিদকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দেওয়ার প্রতিবাদে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মাঠের নামে গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গ সংগঠন যুব অধিকার পরিষদ। তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দাবি আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
এ ছাড়া আবদুল হামিদের দেশ ছাড়ার প্রতিবাদে এবং বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।তখন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরে বৈঠক করছিলেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বৈঠক শেষে তিনি বের হয়ে বিক্ষোভরতদের উদ্দেশে বলেন, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন বলে ঘোষণা দেন।
পরে সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী) এবং ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মো. আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং এসবির একজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত আইজিকে (প্রশাসন) প্রধান করে তিন সদস্যের ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যাহার করা ইমিগ্রেশন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নাম তাহসিনা আরিফ। আর বরখাস্ত করা দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন এসআই মো. আজহারুল ইসলাম ও এটিএসআই মো. সোলায়মান।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র বলেছে, রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন আবদুল হামিদ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে রিয়াদ আহমেদ ও শ্যালক ড. এ এম নওশাদ। ব্যাংকক যেতে বুধবার রাত ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান আবদুল হামিদ। সেখানে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনের প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে তাকে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ওবায়দুল কাদেরের নামও রয়েছে। হত্যা মামলা থাকার পরও আবদুল হামিদকে কেন ব্যাংকক যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলো এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। গতকাল গণঅধিকার পরিষদের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতেও একই প্রশ্ন তোলা হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য যেতে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেত নেওয়া হয়। এই কর্মকর্তা বলেন, আবদুল হামিদ কোন হত্যা মামলার আসামি এটা আমরা জানি না। আর হত্যা মামলা থাকলেই যে তাকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া যাবে না বিষয়টি এ রকম নয়। এতে আদালতের নির্দেশনা লাগবে। তাকে গ্রেপ্তারে বা তার দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
ইমিগ্রেশন পুুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সংবিধানের ৩৪ ও ১০২ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশি কোনো নাগরিককে যাতায়াতে বাধা দেওয়া যাবে না, যদি আদালতের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা না থাকে। তার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। কোনো মামলায় তাকে আটক বা গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো আর্জি বা আবেদন ছিল না।
এদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, তার শ্যালক ডা. নওশাদ খান ও ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষারের দেশ ছাড়ার খবরে কিশোরগঞ্জে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, বিগত ১৭ বছর ক্ষমতায় থেকে নিজের পরিবারের সব সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার মালিক, কাউকে হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ। ফলে দেশ ছাড়ার সুযোগ করে দেওয়ায় বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিএনপি বা জামায়াতের কোনো পদধারী নেতা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে শ্যালক ছাড়াও বড় ছেলে সাবেক এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন, ভাতিজা মিঠামইন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ কামালও দেশ ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
আবদুল হামিদ দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও : অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে দেশ ছাড়তে সুযোগ দেওয়ায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। পরে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আতাউর রহমান খানের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেয়। স্মারকলিপিতে এই আলটিমেটামের কথা বলা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, গণমাধ্যমের তথ্যমতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়তায় ডামি রাষ্ট্রপতি, হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদ তার পুত্র ও শ্যালককে নিয়ে বুধবার দিনগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আপনার সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কীভাবে তিনি পালালেন? ডামি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ একজন ফ্যাসিবাদের দোসর ও হত্যা মামলার আসামি। আমরা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ জবাব, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ডামি রাষ্ট্রপতিকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সসম্মানে চেয়ার ছাড়তে হবে।

 

 

 

 

 

 

,

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *